শিক্ষার্থীদের জন্য অনুপ্রেরণার গল্প
অনুপ্রেরণামূলক ছোট গল্প |
অনুপ্রেরণামূলক গল্প
মাহির নামের একটা ছেলে সারা বছর ঘুরে ফিরে আনন্দ করে অলসতা করে সময় নষ্ট করেছিল । তার মা তাকে পড়ার জন্য কিছু বললেই বলে কোনো সমস্যা নেই আমি পরিক্ষায় পাস হয়ে যাব। মাহির না তো সে মায়ের কথা কোনদিন শুনেছে , আর না তো নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করেছে। সারা বছর না পড়লে পরীক্ষায় লিখতে পারবে না, এটা তো স্বাভাবিক । তাই যেটা হওয়ার ছিল সেটাই হয়েছে । তার ফাইনাল পরীক্ষার রেজাল্ট বেরিয়েছে সে রেজাল্ট আন্তে গিয়ে দেখে সে ফেল করে গেছে। রেজাল্ট দেখার পর তার সবকিছু যেন বদলে যায়, সে একদম শান্ত হয়ে যায়। আর স্কুলেই দাঁড়িয়ে থাকে। আর ঘর পর্যন্ত যাওয়ার যেন তার সাহস নেই ।
ঠিক তখনই তার মায়ের কথা মনে পড়ে। সারা বছর ধরে তার মায়ের পড়তে বসার কথা বলা তার মনে পড়ে। তখন মনে পরে কোনো কিছু চাইতেই সব কিছু এনে দেওয়া বাবার কথা । সে নিজের সারা বছর ধরে করা ভুল বুঝতে পারে , আর ছুট্টে বাড়িতে চলে যায় । বাড়ি গিয়ে তার মাকে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদে, মা জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে ? রেজাল্ট কি খারাপ হয়েছে ? মাহির কাঁদতে কাঁদতে বলে খারাপ না মা আমি পরীক্ষায় ফেল করে গেছি। তার মা তাকে শান্ত করে বলে ঠিক আছে ফেলি তো করেছিস । হেরে তো আর যাসনি !! এখনো তোর কাছে অনেক সময় আছে জীবনে বড় কিছু করার জন্য। যা হাত মুখ ধুয়ে এসে খেতে বস।
মাহিরের রেজাল্টের পরে কি হলো........
মায়ের মুখে এরকম কথা শুনে মাহির মনে একটু সাহস পেল। কিন্তু তা সত্ত্বেও তার মন কেমন যেন অস্থির হয়ে রইল । সন্ধ্যেবেলা হঠাৎ তার বাড়িতে তার দুজন আত্মীয় , আর দুজন প্রতিবেশী ঘুরতে এলো । সারা বছর কখনো আসে না তার রেজাল্ট এর দিনেই এলো । মাহির তার নিজের ঘরে চুপচাপ বসে ছিল।বসে বসে ভাবছিল এরা আমার কাছে পরীক্ষার রেজাল্ট না জিজ্ঞেস করে বসে। সে ভাবছিল কি ভাবতে ভাবতেই তার এক আত্মীয় তার নাম ধরে ডাক দিল। মাহির আস্তে আস্তে সেই ঘরে গেল।সেখানে যাওয়া মাত্রই তারা মাহির কে জিজ্ঞেস করলো কিরে তোর আজকে রেজাল্ট বেরোনোর ছিল না ? কেমন হলো রেজাল্ট ? মাহির বুঝে উঠতে পারছিল না সে কি বলবে ? সে কিছু বলতে যাবে তার আগে তার মা সেই আত্মীয় দের আর প্রতিবেশীদের বলল মাহিরের রেজাল্ট খুব ভালো হয়েছে । ও সব সাবজেক্টে খুব ভালো মার্কস পেয়েছে ।
মায়ের মুখে এরকম কথা শুনে মাহির খুব অবাক হয়ে গেল। ওরা চলে যাওয়ার পর মাহির তার মাকে চেঁচিয়ে বলল, কেন তুমি মিথ্যে বলতে গেলে ? বলে দিতে সত্যি কথা, বলে দিতে আমি ফেল করেছি। ওরা আমাকে খারাপ ভাবলে ভাবতো , এবার কোন কারণে যদি ওরা জানতে পারে যে তুমি মিথ্যে বলেছো , তাহলে তোমাকে ওরা কত খারাপ ভাববে বলো তো। মাহিরের মা একটু হেসে বলল , মনে রাখিস তুই আজকে স্কুলের পরীক্ষায় কিছু নাম্বারের জন্য ফেল করেছিস , জীবনের খেলায় নয় । আমি বিশ্বাস করি যে তুই আজকে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিস৷ আমি বিশ্বাস করি যে, তুই আর কখনো কোন ক্লাসে এবছরের মতো ফাঁকি মারবি না । আমি বিশ্বাস করি তুই তোর মায়ের বলা এই ছোট্ট মিথ্যেটাকে সারা জীবন সত্যি করে দেখাবি ।
মোটিভেশনাল ছোট গল্প
এগুলো শোনার পর মাহির সম্পূর্ণভাবে তার ভুল বুঝতে পারে। সে বুঝতে পারে যে দিনের শেষে সব সময় বাবা-মা-ই সঙ্গে থাকে। যে বাজে অভ্যাস গুলোর জন্য তার আজকে এই অবস্থা সেগুলো সবই জড়ো বস্তু তার এই খারাপ সময় সেগুলোর কোনো অস্তিত্বই নেই । সে বুঝতে পারে তার মায়ের সামনে দেখানো হাসির পেছনে কতটা দুঃখ লুকিয়ে আছে । সে বুঝতে পারে তার মায়ের তাকে নিয়ে কতটা আশা কতটা স্বপ্ন সাজানো আছে । সে তার মাকে আবার জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করে । এবার আর তার মা তাকে থামায় না, তার মা বুঝতে পারে তার ছেলে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে । আর সত্যিই মাহির তার নিজের ভুল এমন ভাবে বুঝতে পারে যে ফেইল করা তো দূর, তারপর থেকে প্রতিটা ক্লাসে সে প্রথম এর জায়গায় কখনো দ্বিতীয় হয় না ।
মোটিভেশনাল গল্প , Bangla Educational Story
আমাদের যা উচিত.......
আমাদের মধ্যেও কোথাও না কোথাও এরকম একটা মাহির আছে। যে চাইলে তো অনেক বড় কিছু করতে পারে। কিন্তু কিছু বাজে অভ্যাস আর অলসতার কারণে পড়াশোনা থেকে দূরে থাকে। আমাদের বাবা মা-ও কিন্তু আমাদের নিয়ে এতটাই আশা করে থাকে । বাকি মানুষ দের কে তাদের তো শুধু রেজাল্ট এর দিনেই দেখা যায় । আমরা চাইলে কিন্তু মাহিরের মতন সম্পূর্ণ অভ্যাস বদলে ফেলতে পারি । সেই মানুষ গুলোর জন্য যারা শত কষ্টকে লুকিয়ে রেখে আমাদের জন্য হাসে, যাতে আমরা ভালো থাকি। আমরা চাইলে কিন্তু জীবনে বড় কিছু করে, নিজের বাবা মায়ের সেই কষ্ট কে দূর করতে পারি । শুধু পড়াশোনা নয় যেকোনো কাজে আমরা যদি নিজের হান্ড্রেড পার্সেন্ট প্রচেষ্টা দিতে পারি। তাহলে আমরা কিন্তু সফল হবোই ।
অনুপ্রেরণামূলকছোট গল্প
তাই শুধু শুধু কোনো প্রকার সময় নষ্ট না করে,নিজের কাজের দিকে অগ্রসর হও। সেটা লেখা পড়া হোক বা অন্য কোনো কাজ। কারন সময় কখনো কারোর জন্য অপেক্ষা করে না। বরং সময়ের জন্য আমরা সব সময় অপেক্ষা করে থাকি।আসা করি, তুমি যদি একটু জ্ঞানী হও তাহলে সহজেই বুঝতে পেরেছ।আর আমি জানি, তুমি জ্ঞানী তাই উদাহরণ স্বরূপ হিসেবে বুঝিয়ে দিতে পারছি না।তবুও একটু উদাহরণ দেয়।যেমন : একটা নিদিষ্ট সময়ে সকালে ঘুম থেকে ওঠার অপেক্ষা করা,নিদিষ্ট সময়ে স্কুলে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা,স্কুল ছুটির জন্য অপেক্ষা করা, ইত্যাদি ইত্যাদি সব।
অনুপ্রেরণার ছোট গল্প
সামনে তোমাদের অনেকেরই পরীক্ষা । তাই আমি চেষ্টা করলাম নিজের কথার মাধ্যমে যদি পরীক্ষার আগে তোমার একটু মোটিভেট করা যায় কি না। তাই এই গল্পটির পরে , আশা করি তোমরা নিজের সব বাজে অভ্যাস সব অলসতাকে কাটিয়ে উঠে হান্ড্রেড পার্সেন্ট । এবং নিজ প্রচেষ্টা পড়াশোনার জন্য দেবে। তোমার বাবা মায়ের মুখের হাসিকে সারা জীবন বজায় রাখার জন্য দেবে। আমরা বাঙালী ব্লগের পক্ষ থেকে আমি 'অন্তর' তোমাদের জন্য শুভ কামনা রইল।
তোমাদের কাছে আমার চাওয়া
তোমাদের কাছে আমার পক্ষ থেকে একটা রিকোয়েস্ট যে, আজকের এই আর্টিকেল টা শেয়ার করো বা না করো,
একটা কমেন্ট কিন্তু অবশ্যই করো । যাতে আরো একজন মাহির তার সব বাজে অভ্যাস আর অলসতাকে কাটিয়ে উঠে পড়তে পারে । এরকম আরও সুন্দর সুন্দর আর্টিকেল সবার আগে পাওয়ার জন্য এই ব্লগ টি সাবস্ক্রাইব করে রেখো ।
আমরা বাঙালী ব্লগের পক্ষ থেকে আমি অন্তর তোমাদের সাথে ছিলাম ।এবং খুব তাড়াতাড়ি আবারও কথা হবে আরও একটি নতুন আর্টিকেলে ।
asadharon golpotakhub bhalo
ReplyDeleteআমাদের গল্প পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ; আপনি আমাদের আরও গল্প পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন
ReplyDeleteBD-Express
আমাদের সাইটে Comment backlink করতে চাইলে,
ReplyDeleteনিচের লিংকে ক্লিক করে ঘুরে আসুন আমাদের সাইটে।
https://mytecbd.com/