শিক্ষার্থীদের জন্য অনুপ্রেরণার গল্প
চাহিদা অনুযায়ী খরচ করুন,
আচ্ছা খুশি থাকার জন্য বা সুখী থাকার জন্য আপনার কি কি দরকার এক বার ভেবে দেখেছেন ? একটা দামি মোবাইল একটা দামি ঘড়ি বা একটা দামি মোটর বাইক তোমাকে সারাজীবন খুশি করতে পারবে? আমার তো মনে হয় না । এখন যদি তুমি বলো আচ্ছা তবে কি, মিডিল ক্লাস ফ্যামিলি দিয়ে শখ রাখাটা কি উচিত নয়। এটার উত্তর আমি এই গল্পের শেষে দেবো। তার আগে এই বাস্তব জীবনের গল্পটা শোনো ।
Bangla Motivation Story
এক জন ব্যক্তির যার চোখে রঙিন স্বপ্ন। সাথে রয়েছে সোনালী ভবিষ্যৎ। কিন্তু তার, জীবন থেকে চাহিদা ছিল প্রচুর যেমন: দামি গাড়ি হবে, দামি বাড়ি হবে।কিন্তু সে কখনো টাকা জমাতে শেখেনি, সে টাকা ওড়াতে জানতো না, সেই লোকটি খুব ধনী পরিবারের নয় বরং ছাপোসা একটা মিডিল ক্লাস ফ্যামিলি থেকে ববসবাস করে।
বাড়িতে তার বোন আর মা রয়েছে। তার বাবা মারা যাবার পর যে প্রাইভেট কোম্পানি তে তার বাবা কাজ করতো , সেখানেই বলে-কয়ে তার বাবার কাজটা সে পেয়ে যায়। আর কিছু করার নেই বলে মুখ বুঝে ওই তেরো হাজার টাকার চাকরিটা সে করতে বাধ্য হয় । তার বাবা বেচে থাকা কালে হেঁটে হেঁটে কাজে যেত কিন্তু সে জয়েন করার কিছুদিন বাদেই একটা নতুন বাইক কিনে বসে। যার ইএমাই মাসে প্রায় তিন হাজার টাকা তাকে গুনতে হতো । আর সে ভাবতো যে , এখন আমি তো কাজ করছিই আর মাসে মাসে তো টাকা চলেই আসবে । তাই কোনো প্রকারের চাপ নেই না। এবং সে তার মনের মত দামি বাইক কিনে বেশ খুশিই ছিল। আর মনে মনে সে এটাও ভাবতে লাগে যে বাবাকে কত করে বলতাম, একটা বাইক কিনে দিলে কি হবে ? কিন্তু বাবা কিনে দেয় নি।কিন্তু এখন আমি ঠিকই বাইক কিনে তার EMI দিব্বিই দিয়ে যাচ্ছে।
একমাস যাবার পর সে হিসেব করে দেখলো তার দামি নতুন গাড়ির পেছনে পেট্রোল কিনতে হচ্ছে দেড় হাজার টাকা । কিন্তু তার মাইনে তো পনেরো হাজার টাকা তার থেকে বাইকের ইএমআই দিতে হয় চার হাজার প্লাস, পেট্রোল দেড় হাজার এবং এর সাথে সে যেখানে বাইক রাখতো সেখানে তাকে মাস গেলে পাঁচশো টাকা করে দিতে হতো । এই ভাবে তার ছয় হাজার টাকা তার বাইকের পেছনে চলে যেতে থাকে। আর এই জন্য মাসে মাইনে পাবার পর তার হাতে সাত হাজার টাকা থাকতো । এটা দিয়ে সে তার সংসার চালাতো ,বোনের পড়া পড়াশোনা চালাতো , গ্যাসের বিল, ইলেক্ট্রিক বিল, টেবিলের বিল সমস্ত টাই মেটাতো। এই জন্য তার নিত্যদিন-এ খাওয়া দাওয়াতে একটু সমস্যা অবশ্যই হচ্ছিল । কিন্তু তার পরিবার সেটা মানিয়ে নিয়েছিল। [ শিক্ষার্থীদের জন্য অনুপ্রেরণার গল্প ]
বেশ কিছুদিন বাদে সে দেখল তারই প্রতিবেশী একটা বড় গাড়ি কিনেছে । বেশ দামী , আর এই দেকে সে মনে মনে ভাবল যে , ওর কাছে যা আছে আমার কাছে তা নেই । সে ভাবতে লাগলো যে, যেকোনো মূল্যে আমায় একটা গাড়ি কিনতেই হবে। কিন্তু গাড়ি কিনতে গেলে তো টাকা চায় । আর যা মাইনে, আর ব্যাংকে যা টাকা আছে তাতে একটা গাড়ি অবশ্য হবে না । তাই সে ব্যাঙ্ক থেকে ঋন নেয়,তার বাড়িটাকে বন্দুক হিসেবে রেখে । আর সে ভাবে ওভার ডিউটি করে সংসার চালিয়ে নেব। কিন্তু ওভার ডিউটি করলেও কত বা দেবে ? মাথায় লোনের চাপ, ঘাড়ে ইএম৷আই এর বোঝা তার সাথে সংসার । সে আর পেরে উঠছিল না। এবার সে সিদ্ধান্ত নেই এই গাড়ি বেঁচেই আমার ঋণের টাকা শোধ করতে হবে। কিন্তু তাতেও তার লোন মুকুব হলো না । ধীরে ধীরে সে এই সব বোঝা কাদ থেকে নামিয়ে নিজেকে এক অন্ধকার দুনিয়ায় ভাসিয়ে দিল । ভীতুর মতো ছেড়ে চলে গেল এই দুনিয়া থেকে। আর ওই বোঝা চাপিয়ে দিয়ে গেল তার মা এবং বোনের উপর।
কিন্তু তার মা বোনের অবস্থাটা কি হবে লজিক্যাল লাগছে না কথাগুলো তাই না ? কারণ আমাদের চোখের সামনে তো সবাই কাজ করে আর লোন নেয়, আর বিভিন্ন জিনিস পত্র কেনে আর এই ভাবেই একটা লোন শোধ করে আরো একটা লোন নেই । আরো একটা চলতে থাকে। [ যুব শক্তির অনুপ্রেরণার গল্প ]
আমরা চাকরি পেলে যা যা করি,
আমরা সাধারণ একটা চাকরি পেয়ে আমাদের ইচ্ছে গুলোকে পূরণ করতে শুরু করি। কেউ তার শখের মোবাইল কিনে ,কেউ তার শখের বাইক ইত্যাদি ইত্যাদি জিনিস পত্র কিনে বসে এক মাসের মাইনে পেয়ে । সে জানেই না , সেই চাকরি টা আগামী মাসে থাকবে কি থাকবে না ? বা কোনো দুর্ঘটনায় আপনার কোনো ক্ষতি হয়ে গেল। ঠিক তখন আপনি কি করবেন ?
কিছু বাস্তব জীবনের কথা, বাংলা গল্প,Bangla Golpo
প্রকৃতি পক্ষে এই যে , চাকরি পাওয়ার সাথে আমাদের চাহিদা গুলো আমাদের ইনকাম বা আয়ের থেকে বড় হতে থাকে । তুমি যদি একটা সাধারণ পরিবারের ছেলে বা মেয়ে হও , তবে আজ থেকে টাকা কামানোর কথা ভাবো ওড়ানোর কথা নয় । মনে রাখবে বড়-লোকেরা বড়লোক হওয়ার জন্য জিনিস কেনে । তাই তারা আরও ধনী হয় । আর গরিবেরা বড় লোক দেখাবার জন্য জিনিস কেনে, তাই তারা আরও গরিব হয় ।
কিছু বুঝতে পারলে বন্ধু ? চাহিদা সম্পর্কে অবশ্যই তোমাকে বুঝতে হবে । কোনটা চাহিদা আর কোনটা অতিরিক্ত চাহিদা। তাই আর দেরি না করে অতিরিক্ত টাকা নষ্ট করা থেকে বিরত থাকো।
নিজের জন্য নিজের পরিবারকে কোন দিনও হুমকির মুখ এর মধ্যে ফেলো না । কোনো কিছু করার আগে খুব ভুল করে ভেবে চিন্তে ডিসিশান নাও।সব সময় নিজেকে প্রশ্ন করতে থাকো ,আমি কি কিনবো কেন কিনবো কি জন্য কিনবো।আর এই বিষয়ে ভাবো একবার নয় , দশবার ভাবো । কারণ এই ডিসিসন টাই তোমাকে এক দিন মধ্যবিত্ত থেকে বড়লোক বানাতে পারে । আর যদি কারোর মনে হয় এত ভেবে জীবন চলে না তবে বন্ধু সব পাখি আকাশে উড়তে পারে না। সময়ের সাথে পাখিরাও মাটিতে লুটিয়ে পড়ে । মনে রেখো তবে এটা ভুল না ।
সব সময় মাথায় রাখতে হবে[ সফলতা ও অনুপ্রেরণার গল্প ]
আজ যদি নিজে কে সাইকেলে কমফোর্টেবল করে ফেল, তবে তুমি বাইক কিনতে পারবে না । তাই তোমাকে কমফোর্ট থেকে বের হতে হবে । নিজেকে আনকমফোর্ট অবস্থায় ফেলতে হবে ।
কিন্তু তার আগে নিজের ক্ষমতাটা এবং তুমি কেমন অবস্থায় আছো সেটা দেখে নেবে । আর কোনো জিনিস কেনার দিকে নয়, কামানোর দিকে প্রকাশ করো তোমার ইচ্ছা । কারণ যদি তোমার চাহিদা পুকুরের মতো হয়, তবে তোমাকে কামাতে হবে সমুদ্র এর মতো। যাতে তোমার চাহিদা গুলো তোমার টাকার কাছে ছোট হয়ে যায় । তুমি যদি বুদ্ধিমান হও তবে আমার কথাগুলো অবশ্যই বুঝতে পারছো । তাই বসে না থেকে ইনকামের রাস্তা তৈরি করো। আজ যদি পাঁচ হাজার থেকে ছ হাজার টাকা ইনকাম করছো, নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাইছো, তাহলে টাকা গুলো অযাথা প্রয়োজন ছাড়া কোনো বাজে কাজের জন্য ব্যয় কর না।
উপদেশ ও অনুপ্রেরণার গল্প
সেই টাকা টাকে ডবল করার চেষ্টা করো । ট্রিপল করার চেষ্টা করো । কারণ মনে রেখো, ধনী ব্যক্তিরা ধনী হবার জন্য বিভিন্ন দামি দামি জিনিস কেনে । আর গরিবেরা বড়লোক ভাব দেখাবার জন্য জিনিস কেনে।
satyi
ReplyDeleteআমাদের গল্প পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ; আপনি আমাদের আরও গল্প পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন
ReplyDeleteBD-Express